পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম ২০২৫
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম ২০২৫ সম্পর্কে আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত দেখব। একটি পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কার্ড দিয়ে আপনি অনলাইন রিলেটেড যেসমস্ত কার্যক্রম রয়েছে,তা করতে পারবেন না।
এগুলো ছাড়া পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কার্ড দিয়ে আপনি অনলাইনে কার্ড যাচাই করণ,কিংবা কার্ডটি সহজে সংশোধনকরণ অথবা যে কোন মুহূর্তে অনলাইন থেকে কার্ড ডাউনলোডও করতে পারবেন না। অতএব আপনার পুরাতন আইডি কার্ড থেকেই কিভাবে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করবেন সেটা নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার প্রয়োজনীয়তা
যারা এখনো এনআইডি কার্ড (NID Card) বা জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে পাননি অথবা যাদের এখন ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি তাদের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস এর জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ একান্তই প্রয়োজন।এছাড়াও ১৮ বছরের নিচে কোন বাংলাদেশী নাগরিকের সরকারি বেসরকারি যেকোনো সেবার জন্যই জন্ম সনদ প্রয়োজন হয়ে থাকে।চলুন এ পর্যায়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ কেন এতটা প্রয়োজন তার বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হলো:-
- বিভিন্ন টিকা প্রধান
- শিশুর স্কুলে ভর্তি
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি
- স্কুলে সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন
- পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
এ সকল ধরনের সেবা পেতে হলে অবশ্যই একজন ১৮ বছরের নিচে নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ একান্তই প্রয়োজন।যেহেতু ১৮ বছরের আগে এনআইডি কার্ড দেওয়া হয় না,তাই পুরাতন জন্ম সনদকে অবশ্যই অনলাইন করার দরকার হয়।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে যা যা প্রয়োজন
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল স্বীকৃত যেকোনো এমবিবিএস বা তার উপরস্থ কোন চিকিৎসক থেকে প্রত্যয়ন পত্র গ্রহণ।
- প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (PSC) বা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (JSC) বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (SSC) প্রয়োজন
- বাবা মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই বাবা মায়ের জন্ম সনদের ফটোকপি
- স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য বাবা,মা, দাদা,দাদীর নামে স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখিত রয়েছে এমন জায়গার কর-প্রধানের প্রমাণ পত্র লাগবে
- নিজের নামের দলিলপত্র (প্রয়োজন সাপেক্ষে)
- জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করতে গেলে সকল বয়সে মানুষের জন্যই যে আবেদন ফর্মটি পূরণ করেছিলেন তার একটি অনলাইন কপি প্রিন্ট করে স্থানীয় সরকারের অফিসে জমা দিয়ে আসতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম (আপডেট তথ্য)
আজকের পোস্টে আমরা মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করেছি -
- পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করার নিয়ম।
- ডিজিট সংখ্যা পরিবর্তন করার মাধ্যমে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করার সম্পূর্ণ নিয়ম।
- নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন কার্ড অনলাইন করার নিয়ম।
এছাড়াও আজকের পোস্টের শেষের দিকে জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হবে।
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করার নিয়ম
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার জন্য দুটি ভিন্ন উপায় রয়েছে।
- পুরাতন জন্ম নিবন্ধনের নাম্বারে ডিজিট সংখ্যা বাড়ানো।
- পুনরায় অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা।
দুটি পদক্ষেপ এর মাধ্যমে খুব সহজেই পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি অনলাইনে স্থাপন করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম - ডিজিট সংখ্যা বাড়ানো
আপনার যে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি রয়েছে তার জন্ম নিবন্ধনের মোট নাম্বার ১৭ এর কম হবে। কেননা বর্তমানে যে সমস্ত জন্ম নিবন্ধন কার্ড দেওয়া হয় তা প্রত্যেকটি ১৭ ডিজিটের হয়ে থাকে।
যদি জন্ম নিবন্ধন কার্ডের মোট ডিজিট এর সংখ্যা ১৭ হয় তাহলে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি অনলাইনে থাকার কথা।
আর যদি জন্ম নিবন্ধন কার্ডের সংখ্যা ১৬ ডিজিটাল হয়ে থাকে তবে তা পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কার্ড।
যাদের পুরাতন জন্ম নিবন্ধন সনদ রয়েছে অথবা হাতে লিখিত জন্ম নিবন্ধনের সনদ রয়েছে, তারা অনলাইন করার জন্য আবেদন করার পর আবেদনের ফি জমা দিয়ে আবেদন কপিটি সিটি কর্পোরেশন অথবা ইলেভেন পরিষদে জমা দিতে হবে।
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার জন্য আপনাকে যে ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে তা হলো bdris.gov.bd
bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনাকে যে সকল তথ্য দিতে হবেঃ-
- যে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করবেন তার তথ্য
- পিতা-মাতার তথ্য
- স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা
- আবেদনকারী ব্যক্তির তথ্য।
সবশেষে মোবাইল ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করার মাধ্যমে আবেদন কপিটি ইউনিয়ন পরিষদ অথবা সিটি কর্পোরেশনে জমা দিতে হবে।
যদি জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করার পর ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন কপি এবং আবেদনের ফি যদি জমা দেওয়া না হয় তবে নিবন্ধনটি বাতিল হয়ে যাবে। ওয়েবসাইটে আবেদন করা সম্পূর্ণ হলে সেখানের দেওয়া তারিখ অনুসারে সিটি কর্পোরেশন অথবা ইউনিয়ন পরিষদ এ আবেদন কপি এবং ফি জমা দিতে হবে।
উক্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি অনলাইন করতে পারবেন।
যেসব ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন এর তথ্য অনলাইনে নেই তারাও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে জন্ম সনদের তথ্য অনলাইন করে নিতে পারেন।
হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করার নিয়ম
যেসব ব্যাক্তির জন্ম নিবন্ধন সনদ হাতে লেখা হয়েছে তাদের তথ্যসমূহ অনলাইনে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই কারো যদি জন্ম সনদ হাতে লেখা হয়ে থাকে নিম্নক্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা সহজেই অনলাইন করা যাবে।
হাতে লিখিত জন্ম সনদ অনলাইন করার জন্য সর্বপ্রথমে bdris.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর যে ব্যক্তি আবেদন করবেন তার ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন পুরো নাম), জন্ম তারিখ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা পূরণ করতে হবে। তারপর আবেদনকারীর পিতা এবং মাথার তথ্য পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীর ব্যক্তি যদি আপনি নিজেই হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে নিজ সিলেক্ট করে সকল তথ্যাদি এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করতে হবে।
সবশেষে, আপনার মোবাইল ফোন নাম্বারটি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। তারপর আবেদনের যে প্রিন্ট কপিটি নিকটস্থ সিটি অথবা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে জমা দিতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনি হাতে লিখিত জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম ২০২৫ কী?
যদি কোন ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন এর সনদের তথ্য অনলাইনে না পাওয়া যায় তবে bdris.gov.bd ওয়েব সাইটে ওই ব্যক্তির নিজের তথ্য, পিতা মাতার তথ্য, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা ও আবেদনকারী তথ্য দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার উপায় কী
জন্ম নিবন্ধন পুরাতন কিংবা হাতে লেখা হলে উক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে আবেদন ফি জমা দেওয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার মানেই হলো জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করা।
FAQ's
জন্ম নিবন্ধন আবেদন করবো কোন লিংক থেকে?
bdris.gov.bd এই ওয়েবসাইট থেকে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন করার জন্য আবেদন করবেন।
জন্ম নিবন্ধন কখন করতে হয়?
আপনার সুবিধামতো যে কোন সময়ই জন্ম নিবন্ধন করা যাবে। কিন্তু সময় বেশি নিলে অনেক তথ্য সংযুক্ত করার প্রয়োজন হয়।
এজন্য কোন শিশুর জন্মের ৪৫ দিন হতে ৫ বছরের মধ্যেই জন্ম নিবন্ধন করে নেওয়া উচিত।
জন্ম নিবন্ধন কপি কোথায় জমা দিতে হবে?
জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন কপি আপনার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ অথবা সিটি কর্পোরেশন রয়েছে সেখানে আবেদন ফি সহ জমা দিতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন নিয়ে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
জন্ম নিবন্ধন নিয়ে সমস্ত সমস্যা অথবা প্রশ্ন রীতিমত আমাদের মাঝে দেখা যায় তা সম্পর্কে সমাধান সহ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
জন্ম নিবন্ধন তথ্য ভুল পেলে কি করব?
যদি পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করে নেওয়ার পর সেখানে ভুল তথ্য দেখতে পান তাহলে আপনি চাইলেই অনলাইনে পুনরায় জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের কিছুদিনের মধ্যেই আপনার তথ্য সংশোধিত হবে।
তথ্য সংশোধনের পর বাজাই করে জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি ডাউনলোড করতে পারবেন
শেষ কথা
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম সম্পর্কে সকল বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।আজকের পোস্টে জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সমস্যা সমূহ নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের উল্লেখিত ওয়েবসাইটে গিয়ে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা হাতে লিখলেও সনদ সহজে ডিজিটাল করে নিতে পারবেন।