বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫ সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন।আগের মত বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কেন মিলছে না সেটাও অনেকে জানতে চেয়েছেন।আজকের ব্লগে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি,বিকাশ মার্জেন্ট একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ,বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
২০২৫ সালে এসে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে যাতে সমস্যা হচ্ছে তাদের জন্য আজকের ব্লগটি অত্যন্ত কার্যকর হবে বলে আশা করছি।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি
বিকাশ মার্জেন্ট একাউন্ট মূলত ব্যবসায়ীদের সাথে অর্থ লেনদেনের একটি ডিজিটাল মাধ্যম।যে কোন ক্রেতা নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবা গ্রহণের পর ওই পণ্যের মূল্য বিকশের মাধ্যমে বিক্রেতাকে পরিশোধ করে থাকে।
যেমন ধরুন আপনি ১০০ টাকার জিনিস কিনলেন।এখন এই ১০০ টাকা আপনি সরাসরি না দিয়ে বিকাশে ওই দোকানদারকে দিতে পারবেন।যেটা সাধারণত বিকাশ ব্যক্তিগত একাউন্টের মাধ্যমেও করা যায়।তবে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই পেমেন্ট করলে ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে কিছু বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
এক কথায় বলতে গেলে ব্যবসায়ীদের মার্চেন্ট একাউন্ট এর বেশি দরকার পড়ে।কোন ব্যবসায় যদি ব্যক্তিগত বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট নেয়,তাহলে যে সুবিধা পাবে,মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট নিলে এর থেকে বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে।বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা নিয়ে আমরা এখনই আলোচনা করব।তাহলে আপনারা ব্যক্তিগত বিকাশ একাউন্ট এবং মার্চেন্ট একাউন্ট এর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা
বিকাশ মার্জেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা গুলোর মধ্যে পেমেন্ট রিফান্ডের সুবিধা অত্যন্ত জনপ্রিয়।চলুন দেখিনি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে কি কি সুবিধা আপনি পাবেন
- প্রথমবার বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুললে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত আপনি বিনামূল্য ক্যাশ আউট করতে পারবেন।আর এই সুবিধা একাউন্ট খোলার তিন মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।৩ মাস হয়ে গেলে ব্যক্তিগত একাউন্টের মতই ক্যাশ আউট চার্জ দিতে হবে।
- বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে পেমেন্ট রিফান্ডের সুবিধা রয়েছে।অর্থাৎ কোন কাস্টমার যদি পেমেন্ট করে আবার সেটা রিফান্ড বা ফেরত চায়,তাহলে বিক্রেতার সম্মতিতে সেই পেমেন্ট অটোমেটিক্যালি রিফান্ড হয়ে যাবে।
- মার্চেন্ট একাউন্টে বিকাশের পক্ষ থেকে অটোমেটিক পেমেন্ট বিনামূল্যে পাওয়া যাবে,যার মাধ্যমে যে কোন কাস্টমার অটোমেটিক পেমেন্ট খুব সহজেই করতে পারবে।
- বিকাশ পার্সোনাল একাউন্টে লেনদেনের ক্ষেত্রে লিমিটেশন রয়েছে।এক্ষেত্রে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে লেনদেনের লিমিটেশন কম, যার ফলে আপনি প্রতিদিন অনেক টাকার লেনদেন করতে পারবেন।
- বিকাশ মার্জেন্ট একাউন্টে পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে কোন লিমিটেশন নাই অর্থাৎ কাস্টমার চাইলে সর্বনিম্ন এক টাকাও পেমেন্ট করতে পারবে।টাকা তোলার ক্ষেত্র কম খরচে একাউন্ট থেকে টাকা তোলা যায়।
- একটি এনআইডি কার্ড দিয়ে পার্সোনাল একাউন্ট ছাড়াও মার্চেন্ট একাউন্টও খোলা যাবে।তবে এক্ষেত্রে ওই অ্যাকাউন্ট দিয়ে রিটেইলার একাউন্ট বা এজেন্ট একাউন্ট থাকা যাবে না।
- মার্চেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে পেমেন্ট অপশন রয়েছে যেমন ডিরেক্ট পেমেন্ট, QR কোড স্ক্যানার,ভিসা কার্ড থেকে পেমেন্ট ইত্যাদি।
- বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে দুইভাবে পেমেন্ট করা যাবে।বিকাশ এপস এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন অথবা *২৪৭# এই নাম্বারের মাধ্যমেও অফলাইনে পেমেন্ট করা যায়।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কি লাগে
- বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট এবং শর্তাবলী পূরণ করতে হয়।চলুন দেখি নেই বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে যা যা লাগে
- প্রথমেই আবেদনকারীকে বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে এবং বয়স সর্বনিম্ন ১৮ হতে হবে।
- পূর্বে যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়নি,এমন একটি নিবন্ধিত বৈধ মোবাইল নম্বর লাগবে।
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি অথবা স্মার্ট কার্ড/পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স/ অনলাইনে এনআইডি কার্ডের প্রিন্ট কপি
- টিন(TIN) সার্টিফিকেট ও ট্রেড লাইসেন্সের কপি লাগবে মেয়াদ সহ।
- বিদ্যুৎ,পানি,গ্যাস যেকোনো একটি বিলের কপি লাগবে।
- আবেদনকারীর ব্যাংক বিবরণী যেমন ব্যাংক একাউন্টের নাম,নাম্বার ব্যাংকের নাম এবং কোন শাখায় একাউন্ট রয়েছে সেই শাখার নাম
- কিছু নির্দিষ্ট কোম্পানির ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট অফ ইন কর্পোরেশন ও মেমোরেন্ডাম অফ অ্যাসোসিয়েশন লাগবে৷ তাছাড়াও পার্টনারশিপ ফার্ম গুলোর ক্ষেত্রে পার্টনারশিপের সমর্থন পত্র লাগবে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনার ফোনের যেকোনো ব্রাউজার থেকে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন।
প্রথম ধাপ:- ওয়েবসাইটে প্রবেশ
এর জন্য প্রথমে ক্রোম ব্রাউজার বা যে কোন ব্রাউজার থেকে bkash.com/business/merchant এই লিংক এ ক্লিক করে বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ:-ফরম ফিল-আপ
- এখানে আপনাদের একটি সাইন আপ ফরম পূরণ করতে হবে।
- প্রথমেই mercent বা দোকানের নাম দিতে হবে।সেই সাথে দোকান কোথায় অবস্থিত সে জেলা ও এলাকা সিলেক্ট করুন
- যোগাযোগের জন্য আপনার নাম, মোবাইল নম্বর ও ইমেইল দিন।এছাড়াও যদি অন্য কোন উপায় আপনাকে খুঁজে পেতে সহায়ক হয় তাহলে সেটি দিতে পারেন।
- এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র আছে কিনা সেটি জানতে চাইবে।সেখানে হ্যাঁ ক্লিক করুন।মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতেই হবে।
- এরপর আপনার বই হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা সেটা জিজ্ঞেস করবে।এখানে হ্যাঁ ক্লিক করে ট্রেড লাইসেন্সের নাম্বার এবং মেয়াদের সকল তথ্য দিয়ে “জমা দিন” এই অপশনে ক্লিক করুন।
- সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করলে বিকাশ থেকে যেকোনো প্রতিনিধি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।এরপর নির্দিষ্ট প্রতিনিধি আপনার সাথে সরাসরি যোগাযোগের পর আরো কিছু ডকুমেন্টস চাইবে সেটা অবশ্যই দিয়ে দিবেন।
বিকাশ মার্জেন্ট একাউন্ট কেন মিলছে না?
সঠিকভাবে সকল ডকুমেন্টস পূরণ করার পরেও অনেকেরই মার্চেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না বা কোন প্রতিনিধি ও যোগাযোগ করছেনাহ৷সত্যি বলতে এর একটাই কারণ হলো বিকাশের সাথে যুক্ত স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটররা।
যাত্রী এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে সরাসরি “বিকাশ এজেন্টের” সাথে যোগাযোগ করবেন।সবচেয়ে ভালো হয় আপনার নিকটস্থ বিকাশের অফিস কিংবা বিকাশ এজেন্টের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তাদের মাধ্যমে মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার কার্যক্রম শেষ করা।
এছাড়াও আপনি আপনার নিকটস্থ “বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে” ডকুমেন্টস নিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করবেন এবং তাদের মাধ্যমে মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার চেষ্টা করবেন।যেহেতু বর্তমানে অনেক মানুষ একসাথে অনলাইনে এপ্লাই করছে,তাই আগের মত এখন আর মার্চেন্ট একাউন্ট দিচ্ছে না।সেজন্য আপনাকে নিজে গিয়ে যোগাযোগ করে তারপরে একাউন্ট খুলতে হবে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাসের ক্যাশ আউট চার্জ সম্পূর্ণ ফ্রি।এর পরবর্তীতে পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট এর মতই ক্যাশ আউট চার্জ যুক্ত হবে অর্থাৎ ১.৭০% টাকা চার্জ করা হবে। তবে আপনি যদি প্রিয় এজেন্ট অথবা এটিএম বুথ থেকে ক্যাশ আউট করেন সে ক্ষেত্রে চার্জ হবে ১.৪৯%.
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট লিমিট
- মার্চেন্ট ও মার্চেন্ট এর ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ৩০,০০০ টাকা ও মাসিক সর্বোচ্চ ৪,৫০,০০০ টাকা করতে পারবেন।
- গ্রাহক পেমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ৩০,০০০ টাকা ও মাসিক সর্বোচ্চ ৫,৫০,০০০ টাকা করতে পারবেন।
- মার্চেন্ট থেকে গ্রাহক /ক্রেতার সেন্ড মানির ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা ও মাসিক সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা করতে পারবেন।
- মার্চেন্ট থেকে এটিএম বা এজেন্ট এর ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা ও মাসিক সর্বোচ্চ ৩,০০,০০০ টাকা করতে পারবেন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট সেন্ট মানি লিমিট
মার্চেন্ট থেকে গ্রাহক /ক্রেতার সেন্ড মানির ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা ও মাসিক সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা করতে পারবেন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর অসুবিধা
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের অসুবিধা একটিই।আর সেটি হলো বর্তমানে সহজে মার্চেন্ট একাউন্ট পাওয়া যাচ্ছে না।অন্য ক্ষেত্রে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট থেকে মার্চেন্ট একাউন্টে সুবিধা তুলনামূলকভাবে বেশি।
এছাড়াও প্রথম তিন মাসে ক্যাশ আউট চার্জ ফ্রি হলেও পরবর্তীতে ক্যাশ আউটের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ কেটে নেয়।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট ব্যালেন্স চেক ২০২৫ | Islami Bank Account Balance Check
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট লিংক বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট লিংক হলো bkash.com/business/merchant
FAQ’s
বিকাশ মার্চেন্ট এর কাজ কি?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে খুব সহজে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা পেমেন্ট লেনদেন করতে পারবেন।এক্ষেত্রে বড় একটি সুবিধা হল পেমেন্ট পুনরায় রিফান্ড করা যায়।যেটা পার্সোনাল একাউন্টের মাধ্যমে করলে চার্জ প্রযোজ্য।
বিকাশ মার্চেন্টের সুবিধা কি কি?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুললে প্রথম তিন মাস ক্যাশ আউট চার্জ একদম ফ্রি।
বিকাশ মার্চেন্ট থেকে ক্যাশ আউট চার্জ কত?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুললে প্রথম তিন মাস ক্যাশ আউট চার্জ ফ্রি।পরবর্তীতে, প্রিয় এজেন্ট নাম্বারে ক্যাশ আউট চার্জ ১.৪৯%।
বিকাশ মার্জেন্ট একাউন্ট চেক?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে সকল স্টেটমেন্ট পেতে ১৬২৪৭ নাম্বারে কল করুন।
বিকাশ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার কত
১৬২৪৭ হলো বিকাশ কাস্টমার কেয়ার মার্চেন্ট।
বিকাশ হাজারে কত টাকা কাটে?
এটিএম বুথ বা বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে ক্যাশ আউট করলে হাজারে ১৪.৯০ টাকা কাটে।
ইতিকথা
আজকের ব্লগে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম, মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।এছাড়াও মার্চেন্ট একাউন্টে বর্তমানে কেন মিলছে না সে বিষয়েও আলোচনা করেছি।আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাজে আসবে।এছাড়াও বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট নিয়ে আপনাদের যে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টে জানাতে পারেন।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৫
প্যারামেডিকেল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৫